নিজস্ব প্রতিবেদক: সকল জল্পনা-কল্পনা ঠেকিয়েই করোনায় থেকে বাংলাদেশ এখন নিরাপদ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘গত মার্চ মাসে কোভিড যখন দেশে প্রথম চলে আসে তখন নানা মানুষ নানারকম জল্পনা কল্পনা শুরু করতে থাকে। তখন বলা হতো বাংলাদেশে মানুষের লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে। করোনায় লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে। অথচ বাংলাদেশে কোভিডে আক্রান্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার বিশ্বের সবচেয়ে কম দেশের কাতারেই রয়েছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত বা ইউরোপ, আমেরিকার থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। কোভিডে বাংলাদেশ এখন অনেকটাই নিরাপদ। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিক নির্দেশনা ও দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই’।
রোববার (৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শিশু হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত “জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২০” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে সারাদেশব্যাপী ১ লাখ ২০ হাজার ক্যাম্পে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণাকালে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক আরো বলেন, ‘আজকের প্রতিটি সুস্থ শিশুই আগামী দিনের উজ্জ্বল বাংলাদেশের কাণ্ডারি হবে। আজকের শিশুকে টিকা দিলে সেই সন্তান ভবিষ্যতের সুস্থ ও মেধাবী সন্তান হবে। এই সন্তান ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। একইভাবে এই টিকা না দেয়া হলে সন্তান নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সন্তান হাবা-গোবা, বেটে হতে পারে। একটি রোগাক্রান্ত সন্তান একটি পরিবারের জন্য অনেক কষ্টের কারণ। তাই দেশে একটি শিশুও যেন রোগাক্রান্ত হয়ে না জন্মায় সেদিকে সরকার যে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করছে তা আমাদের সকলকে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিটি এলাকার মায়েদের টিকাদান কেন্দ্রে পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে’।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, আজ থেকে (৪ অক্টোবর) ১৭ অক্টোবর সারাদেশর সকল ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র,কমিউনিটি ক্লিনিক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সমূহে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। মন্ত্রী মায়েদের উদ্দেশ্য করে জানান, শিশুর জন্মের পর প্রতিটি মাকে এক ঘণ্টার মধ্যে শাল দুধসহ মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত কেবল মায়ের বুকের দুধই খাওয়াতে হবে। শিশুর বয়স ৬ মাস পার হলে তখন মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে অন্যান্য খাবার দিতে হবে।
উল্লেখ্য, টিকাদান ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দেশের ৬ মাস থেকে ১ বছরের কম বয়সী প্রায় ২৭ লাখ শিশুকে নীল রঙের ১টি করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল এবং ১ বছর থেকে ৫ বছর বয়সী প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ শিশুকে লাল রঙের ১টি করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপি আই টিকাদান কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি প্রফেসর শহীদুল্লাহ,লাইন ডিরেক্টর মুস্তাফিজুর রহমান সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।